৭ মাস আগে উপজেলার গুনারীতলা ইউনিয়ন সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র আর্যকে অনিয়ম ও অসদাচরণের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। গত ফেব্রুয়ারি মাসে তার বিরুদ্ধে অভিযোগকারী অভিযোগ প্রত্যাহার করলে তিনি পুনরায় গুনারীতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিসে যোগ দেন। পৌরসভার জোনাইল নয়াপাড়ার বাসিন্দা বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল হোসেন বেলী জানান, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ৭ শতাংশ জমির নামজারির জন্য গুনারীতলা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র আর্য তার কাছে ১৬ হাজার টাকা দাবি করেন। তিনি দুই সপ্তাহের মধ্যে নামজারি সম্পন্ন করবেন বলে জানালে বীর মুক্তিযোদ্ধা বেলাল হোসেন তাকে ১৬ হাজার টাকা দেন। চাহিদা অনুযায়ী উৎকোচ দেওয়ার ৮ মাস পার হলেও জমির নামজারির কাজ করেননি বিমল চন্দ্র। এ অবস্থায় টাকা ফেরতের চাপ দিলে দুই হাজার টাকা ফেরত দিয়ে বাকি টাকা দেই-দিচ্ছি করে ঘোরাচ্ছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ভুক্তভোগী জানান, তার জমির ৪টি নামজারির প্রতিটির জন্য বিমল চন্দ্র ১৮ থেকে ১৯ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। একই গ্রামের অপর ভুক্তভোগী জানান, বিমল চন্দ্রকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে নামজারির আবেদন দেওয়ার পর তিনি (বিমল) জমির পরিমাণ কম লেখেন। পরে ওই একই কাজের জন্য পুনরায় টাকা আদায় করেও দেড় মাস তাকে বিভিন্ন অজুহাতে ঘোরাতে থাকেন বিমল। চরবন্দ গ্রামের রাশেদুল ইসলাম জানান, ক্ষুর্দ্দ জোনাইল মৌজার সরকারি স্বার্থ রক্ষা ও অবৈধ দখলদার উচ্ছেদের জন্য তিনি জামালপুর জেলা প্রশাসকের বরাবর ২০০৮ সালে একটি অবেদন করেন। এ বিষয়ে সংশ্নিষ্ট দপ্তরের তদন্ত শেষে জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে মাদারগঞ্জ সহকারী কমিশনারের (ভূমি) কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে ৩১.৪৫.৩৯০০.০১৬.১৪.০০২.১৮-৩৫৮ স্মারকে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়।
মাদারগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ইসুকৃত চিঠির বিষয়ে সরেজমিনে তদন্ত করতে সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র আর্যকে প্রতিবেদন পাঠানোর দায়িত্ব দেন। রাশেদুল জানান, রহস্যজনক কারণে বিমল চন্দ্র আর্য ফাইলটি খুঁজে পাচ্ছেন না বলে ঘোরাচ্ছেন। তার ধারণা মোটা অঙ্কের উৎকোচ নিয়ে তিনি নিজেই হয়তো প্রতিপক্ষের কাছে ফাইলটি দিয়ে দিয়েছেন। এছাড়া মাঠ পর্যায়ে দখল তদন্ত না করে নিশ্চিন্তপুর মৌজার ১৮৫ শতাংশ বিরোধপূর্ণ জমি ভোগদখলরত না থাকা সত্ত্বেও উৎকোচ নিয়ে নামজারির জন্য সুপারিশ করেন বিমল চন্দ্র।
মাদারগঞ্জ সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাফরোজা আক্তার জানান, ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা বিমল চন্দ্রের বিরুদ্ধে তার কাছে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ দেয়নি। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা জানাবেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দিলে তিনি তদন্ত করবেন। তদন্তে দোষী হলে অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তবে গুনারীতলা ইউনিয়নের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা বিমল চন্দ্র আর্য তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) রফিকুল ইসলামের সঙ্গে এ বিষয়ে ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি এ সম্পর্কে ফোনে কিছু বলতে পারবেন না বলে জানান।